এসি বা Alternating Current এবং ডিসি বা Direct Current

maxresdefault

কারেন্টের দুটি ভিন্ন রুপ আছে – এসি বা Alternating Current এবং ডিসি বা Direct Current। এই লেখাতে আমরা এই দুটি প্রধান ধারণার পার্থক্য এবং তাদের ব্যবহার নিয়ে আলোচনা করব।

1. AC বা Alternating Current কাকে বলে?

AC এর পূর্ণ নাম হলো Alternating Current, যা বাংলায় অর্থ পরিবর্তনশীল বিদ্যুৎ। এই কারেন্ট একটি নির্দিষ্ট সময়ের পরে তার অভিমুখ (Direction) ও মান (Value) বদলায়, তাই এটি কে AC বা Alternating Current বলা হয়। এই ধরণের কারেন্ট অনেক বেশি ভোল্টেজ উৎপন্ন করা সম্ভব, মোটামুটি ৩৩০০০ ভোল্ট পর্যন্ত। AC কারেন্ট এর একটি বিশেষ সুবিধা হলো এই কারেন্ট কে ট্রান্সফরমার ব্যবহার করে ভোল্টেজ কে উন্নত ও কমাতে পারা। তার ফলে খুব সহজেই অনেক দূরে পর্যন্ত প্রেরণ করা যায়।

2. DC বা Direct Current কাকে বলে?

DC হলো Direct Current বা অপরিবর্তনশীল কারেন্ট। এটি একটি নির্দিষ্ট দিকে প্রবাহিত হয় এবং অপরিবর্তনী মান ধরে থাকে। DC কারেন্টের দুটি দিক থাকে – একটি হলো পজেটিভ (Positive) এবং অন্যটি হলো নেগেটিভ (Negative)।

3. AC ও DC মধ্যে প্রার্থক্য

বৈশিষ্ট্যAC বা Alternating CurrentDC বা Direct Current
অভিমুখ ও মান পরিবর্তনহয়নয়
উৎপন্ন করতে ব্যবহৃতঅনেক বেশি ভোল্টেজইলেকট্রনিক ডিভাইস এবং ব্যাটারিতে
ব্যবহারবাড়ি, কারখানা, প্রযুক্তিগত উপকরণেইলেকট্রনিক ডিভাইস, ব্যাটারি, সোলার প্যানেল

4. AC এবং DC কে পরিবর্তন করা

AC কে আমরা ইনভার্টার ব্যবহার করে DC এ পরিবর্তন করতে পারি, আর DC কে আমরা রেক্টিফায়ার ব্যবহার করে AC এ পরিবর্তন করতে পারি। এই পরিবর্তনের মাধ্যমে আমরা বিভিন্ন ধরনের ইলেকট্রিক ডিভাইসে ব্যবহার করতে পারি।

5. প্রচলিত হার্জ

AC এর ফ্রিকোয়েন্সি ৫০ বা ৬০ হার্টজ হতে পারে, আর DC এর ফ্রিকোয়েন্সি শুন্য হয়।

এই পাঁচটি পার্থক্যের মাধ্যমে আমরা AC এবং DC কারেন্টের বৈশিষ্ট্য এবং তাদের ব্যবহার সম্পর্কে জানতে পেরেছি। এই ধরণের বিভিন্ন ধারণা অন্যান্য শিক্ষার্থীদের জন্য একটি উপকারী বিষয় হতে পারে, যেখানে তারা বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে ইলেকট্রিক বিজ্ঞান নিয়ে অধ্যয়ন করতে পারে।

আমাদের দেশের AC বা Alternating Current প্রতি সেকেন্ডে ৫০ বার পরিবর্তন হয়। যার মাঝে একটি পজেটিভ(Positive) ও একটি নেগেটিভ(Negative) সাইকেল নিয়ে পূর্ণ একটি ফ্রিকুয়েন্সি পরিমাপ করা হয়।এখান থেকে আমরা সহজে বলতে পারি যে ৫০ হার্জ ফ্রিকুয়েন্সিতে প্রতি সেকেন্ডে আমরা ৫০ বার পজেটিভ(Positive ও ৫০ বার নেগেটিভ(Negative সিগন্যাল বা ভোল্টেজ পাবো। তাহলে প্রতিটি হার্জের সময় লাগবে ১/৫০=০.০২ সেকেন্ড বা ২০ মিলিসেকেন্ড।

এবার আমরা মূলত একটি হার্জ নিয়ে কাজ করবো উপরের চিত্র থেকে। একটি পরিবর্তনশীল রাশির ধনাত্মক ও ঋণাত্মক এর মাঝে সবসময় শূন্য বিবেচনা করা হয়ে থাকে যা 0V দিয়ে দেখানো হয়েছে। মাঝাখানে আমরা সবসময় জিরো ভোল্টেজ পাবো।একটি ফ্রিকুয়েন্সি নিয়ে যখন কাজ করছিঃ চার্জ সঞ্চয় করে রাখতে পারে এমন ডিভাইস ক্যাপাসিটর নিয়ে আমরা এখন কাজ করবো। আমরা জানি ক্যাপাসিটরের দুটি প্রান্ত থাকে। একটি পজেটিভ ও অপরটি নেগেটিভ। এবার প্রচলিত নিয়ম অনুযায়ী এসির দুটি প্রান্তকে ক্যাপাসিটরের দুটি প্রান্ত সাথে সংযুক্ত করবো।তাহলে প্রথম ফ্রিকুয়েন্সির ক্ষেত্রে, ক্যাপাসিটরের পজেটিভ প্রান্তের সাথে এসির উপরের প্রান্ত লাগানো আছে যেটি পজেটিভ বা ধনাত্মক আধানে চার্জিত হবে ও নেগেটিভ প্রান্তটি কারেন্টের নিচের প্রান্তের সাথে লাগানো আছে সেটি ঋণাত্মক আধানে চার্জিত হবে।

তাহলে ধরি প্রথম ফ্রিকুয়েন্সির জন্য ক্যাপাসিটর পজেটিভ +২ ভোল্ট অর্জন করলো।প্রথম ফ্রিকুয়েন্সি তো গেলো এবার বাকি ৪৯ ফ্রিকুয়েন্সির কি অবস্থা হবে??? কারন আমরা তো জানি এসি হলো পরিবর্তনশীল কারেন্ট। আচ্ছা তাহলে এবার দ্বিতীয় ফ্রিকুয়েন্সির জন্য দেখি কি হয়।দ্বিতীয় ফ্রিকুয়েন্সিতে এসি বা অল্টারনেটিং কারেন্ট প্রান্ত দুটি প্রথম ফ্রিকুয়েন্সির বিপরীত। তাহলে ক্যাপাসিটর যে প্রান্তে আগে এসির ধনাত্মক সিগন্যাল প্রবেশ করেছিলো এখন ক্যাপাসিটরের সেই প্রান্তে একই এসি থেকে ঋণাত্মক সিগন্যাল প্রবেশ করবে।আবার যেই প্রান্তে প্রথমে এসি বা অল্টারনেটিং কারেন্ট থেকে ঋণাত্মক সিগন্যাল প্রবেশ করেছিলো সেখানে ধনাত্মক সিগন্যাল প্রবেশ করবে। তাহলে এখানে নেগেটিভ -2 পাবো।অর্থাৎ +২-২= ০ ভোল্ট অর্থাৎ দ্বিতীয় ফ্রিকুয়েন্সি ক্যাপাসিটরে জমে থাকা পুরো ২ ভোল্ট নিস্ক্রিয় করে দিবে। এইভাবে এসি বা অল্টারনেটিং কারেন্ট থেকে আসা পরিবর্তনশীল মান থেকে আউটপুট জিরো পাবো। একারনে মূলত এসি সরাসরি জমা রাখতে পারি না।

আমরা ইতিমধ্যে জেনেছি যে, ডিসি বা ডাইরেক্ট কারেন্ট এর মান অপরিবর্তিত থাকে। আমারা যদি ক্যাপাসিটরের দুই প্রান্তে প্রচলিত নিয়ম অনুযায়ী ডিসি বা ডাইরেক্ট কারেন্ট সাপ্লাই দেই তাহলে এর আউটপুটে মান পাবো।

ক্যাপাসিটর ভোল্টেজ বা সিগন্যাল গ্রহণ করতে থাকবে। এখানে কোন পরিবর্তনশীল সিগন্যাল নেই যার কারনে সিগন্যাল ডিসচার্জ হয়ে যাবে। একারনে আমরা যদি ক্যাপাসিটরের দুই প্রান্তে ডিসি বা ডাইরেক্ট কারেন্ট এর দুই দিক সংযোগ দেই তবে আমরা আউটপুটে জিরো পাবো না। এর ফলে ক্যাপাসিটর যেহেতু ভোল্টেজ বা সিগন্যাল গ্রহণ করতে থাকবে তাই ক্যাপাসিটর ব্লক হয়ে থাকবে এবং কারেন্ট জমা রাখতে পারবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Category